সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

রিতা রায় মিঠু


সেদিন সন্ধ্যায় যা ঘটেছিল

২৮শে ফেব্রুয়ারী ছিল হিমাংশু ও মিত্রার দশম বিবাহবার্ষিকী। দিনটি ছিল মঙ্গলবার, তাই কারোরই ছুটি ছিলোনা। প্রবাসে প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী সামাজিক অনুষ্ঠানগুলো সপ্তাহের শনিবার বা রবিবার উদযাপন করা হয়ে থাকে, নাহলে শুক্রবার সন্ধ্যাটিও মন্দ হয়না। আমরা সবাই মিলে মিশে ঠিক করেছিলাম মিত্রা-হিমাংশুর দশম বিবাহ বার্ষিকী উদযাপন করবো ৯ই মার্চ, শুক্রবার সন্ধ্যাতে।


এখানে বাঙ্গালী পরিবার মোটামুটি বেশ কিছু আছে/ মাথা গুনলে পরে কম করে ৫০-৬০ জনতো হবেই। যারা এই অনুষ্ঠানে এসেছিল, তাদের মধ্যে আমরা ও পিঙ্কিরা বেশ অনেকটা দূর থেকে এসেছি, যেমন তিন ঘন্টা গাড়ী ড্রাইভ করতে হয়েছে। শুক্রবারে সকলেরই অফিস কাচারি খোলা থাকে, কাজকর্ম সেরে যে কোন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে গেলে সন্ধ্যা পেরিয়ে যায়। তা আমাদের সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত হয়ে গেছিলো। রাত হওয়ার মূল কারন হলো, আমরা সরাসরি মিত্রাদের বাড়ী যাইনি। মিত্রাদের শহরেই আমার দুই মেয়ে পড়াশুনা করছে। এই বছরের মে মাসে দুই জনেই যার যার প্রতিষ্ঠান থেকে গ্র্যাজুয়েশান করে ফেলবে। তারপর তারা উচ্চ শিক্ষার্থে অন্য স্টেটে চলে যাবে। আমাদের দুই মেয়ে এই শহরে গত চার বছর ধরেই আছে। ওদের সূত্র ধরেই এখানের বাঙ্গালীদের সাথে আমাদের পরিচয়। আমার মেয়েরা কালচারাল অনুষ্ঠানগুলতে নাচ গান করে থাকে, এখানের বাঙ্গালীদের মধ্যে অনেকেই খুব ভালো নাচ গান করে থাকে। তাদের মধ্যে পিয়ালী ও জয়দীপ অন্যতম।

জয়দীপ ও পিয়ালী স্বামী স্ত্রী, ওদের একটা মাত্র ছেলে দেবর্ষিকে নিয়ে ওদের ছোট্ট সাজানো সংসার।
 জয়দীপ এখানে স্টেট ইউনিভার্সিটিতে অধ্যাপনা করে, পিয়ালীও একসময় খুব ভালো চাকুরী করতো, এখন ঋষিকে সময় দিচ্ছে। পিয়ালী ও জয়দীপকে দুই বাংলার সকল বাঙ্গালিই খুব পছন্দ করে। কারণ ওরা দুজনেই খুব হৈ হুল্লোড়, গান-বাজনা করে আসর জমিয়ে রাখতে পারে। পিয়ালীর আরেকটি গুনও আছে, সে একটু ডাকাবুকো ধরনের, মানে খুব সাহসী। আমি ভুত ভয় পাই শুনে ও বলেছে যে ওর বর যখন নানা সেমিনারে কয়েকদিনের জন্য বাইরে যায়, এই সুযোগে পিয়ালী রাত জেগে ভুতের ছবি দেখে। একা একাই দেখে , কারণ ওর বর জয়দীপও ভুত ভয় পায়। ছোট্ট একটা ঘটনার কথা বলি যা পিয়ালীর মুখ থেকে শুনেছি। একরাতে ওরা সবাই ঘুমিয়ে ছিলো। মাঝরাতে কিচেন থেকে আসা বিকট শব্দে পিয়ালীর ঘুম ভেঙ্গে যায়। আওয়াজটা অনেকটাই ব্লেন্ডার মেশিন চলার আওয়াজের মত। নিশুতি রাতে ব্লেন্ডার মেশিন একা একা চালু হওয়ার কথা নয়, অথচ কিচেন থেকে আওয়াজ আসছে। পিয়ালী ধরে নিয়েছে চোর এসেছে। সাথে সাথে পিয়ালী জয়দীপকে ডেকে বলেছে, উঠে গিয়ে দেখতে, কিচেনে কে ঢুকে পড়েছে এই মাঝরাতে। পিয়ালী ভুতে ভয় পায়না ঠিক কিন্তু চোরকে ভয় পায়। আর জয়দীপ বোধ হয় চোর ও ভুত, দুটোই ভয় পায়, সে নাকি ভয়ের চোটে কাঁথা দিয়ে তার আপাদমস্তক মুড়িয়ে বউকে পাঠিয়েছে দেখতে, আসল ঘটনা কি। শেষ পর্যন্ত এই ডাকাবুকো পিয়ালী হাতে একটা লাঠি নিয়ে একা কিচেনে ঢুকে দেখে ব্লেন্ডার মেশিনটি অটোমেটিক চালু হয়ে গেছে। এই হচ্ছে পিয়ালী, সংসারের যাবতীয় কাজ ও নিজের দায়িত্বে করে থাকে। পিয়ালীর শাশুড়ী মানে আমাদের সকলের মন্দিরা মাসী উঠতে বসতে পিয়ালীর বুদ্ধির তারিফ করে থাকেন। মন্দিরা মাসী এখানে থাকেননা, কলকাতাতেই থাকেন, বছরে দুই একবার করে এখানে আসেন একমাত্র ছেলে, ছেলে বউ ও নাতির সাথে মাসখানেক সময় কাটিয়ে যান।

এতক্ষণ ভূমিকা করলাম, এবার মূল গল্পে আসি।
 আমাদের তিন মেয়ে। দুই মেয়ে কলেজে পড়ে, ছোট মেয়েকে নিয়ে আমরা স্বামী-স্ত্রী আছি আমাদের ছোট্ট শহরটিতে। আমরা পরিবারের পাঁচজন মিলে অনেকদিন কোথাও যাইনি। বড় দুই মেয়ের কলেজের ব্যস্ততার কারনে আমাদের সাথে সব সময় সামাজিক অনুষ্ঠানগুলোতে যাতে পারেনা। এখানের সকলেই ওদের দুই বোনকে খুব ভালোবাসে। এই মে মাসেই যেহেতু ওদের এই শহরের পড়ার পাট চুকে যাচ্ছে, তাই অনেকদিন পর ওদেরকে সাথে নিয়ে আমরা মিত্রাদের বাড়ীতে গেছি। ওখানে গিয়ে আরও অনেককেই পেয়েছি ওখানে। বিবাহবার্ষিকীর মত এমন সুন্দর এক অনুষ্ঠানে সাধারনতঃ সকলেই অংশগ্রহণ করতে চায়। তা এই অনুষ্ঠানটি অর্গ্যানাইজ করেছে আমাদের পিয়ালী। ও আমাদের সকলকে দায়িত্ব দিয়েছে যেনো প্রত্যেকে একটা করে আইটেম রান্না করে নিয়ে আসে। সকলেই নানা রকম আইটেম রান্না করে নিয়ে এসেছে, মিত্রা নিজেও কয়েকটি আইটেম রান্না করেছে। অনুষ্ঠান খুব জমে উঠেছে। সবাই খাচ্ছে দাচ্ছে, গল্প গুজব করছে, বাচ্চারা দুরন্তপনা করছে, কেউ কেউ আবার ব্যথাও পাচ্ছে, মোটের উপর প্রানবন্ত অনুষ্ঠান।

এক সময় অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদের বাড়ী যাওয়ার কথা মনে পড়তেই একজন দুজন করে জমাটি আসর থেকে বিদায় নিতে শুরু করলো।
 আগতদের অর্ধেকই যখন চলে গেছে, আমার বরেরও উঠার ইচ্ছে হলো। এদিকে যে কয়জন বাকী ছিলো, তারা আমার দুই মেয়ের সাথে জমিয়ে গল্প করছিলো। বোন সালমা রেখা প্রস্তাব করলো, ওদের বাড়ীতে গিয়ে যেনো একটু চা খেয়ে যাই। রাত সাড়ে এগারোটার সময় আবার রেখার বাড়ীতে যাওয়া, আমার মেয়েরা এক কথাতেই রাজী হয়ে গেলো। অন্য সময় হলে মেয়ের বাবা মেয়েদের কথাতেই সায় দিতো, কিনতু সে রাতে তার জ্বর চলে আসায় রেখা-আলমগীর ভাইয়ের বাড়ীতে আর যেতে রাজী হলোনা। তার বদলে আমার মেজো মেয়ে মিত্রা আন্টির কিচেনে ঢুকে চা বানাতে লেগে গেলো। তার চা এতো বেশী ভালো হয়েছিলো যে তাকে দ্বিতীয় দফা আরেকবার চা করতে হয়েছিলো। দুইবার চা খাওয়ার পরে আর কোন উসিলা পাওয়া গেলোনা, আরও কিছুক্ষন আড্ডাটিকে চালিয়ে নেওয়ার। বাকী সবাই যার যার মত মিত্রা-হিমাংশু দম্পতির সুখী জীবন কামনা করে বাড়ীর দিকে রওনা হয়ে গেছে। এবার আমাদের যাওয়ার পালা। আমরাও বাইরে বেরিয়ে এসেছি। দেখলাম আমাদের সাথে পিয়ালী-জয়দীপও বেরিয়ে এসেছে। রাস্তায় পার্ক করে রাখা গাড়ীতে যে যার যার মত করে উঠে যাচ্ছে।

রাত তখন বাজে একটা।
 আমার মেজো মেয়েটা আমাদের গাড়ীটা চালাবে, সে দাঁড়িয়ে থেকে সবাইকে গাড়ীতে উঠার সুযোগ দিচ্ছিল। আমি তখনও গাড়ীতে উঠিনি। ওপাশে পিয়ালীকে দেখলাম ছেলে ঋষিকে ওদের গাড়ীর পেছনের সীটে বসিয়ে সীট বেল্ট বেঁধে দিয়ে চাইল্ড ডোরটা বন্ধ করে ওপাশ দিয়ে ঘুরে আসতে। কারণ এপাশ দিয়ে এসে ও গাড়ীতে ঢুকে ছেলের পাশে বসবে। সামনের সীটে বসেছে জয়দীপ তার মামনিকে পাশে নিয়ে। আমি যেই মাত্র গাড়ীতে ঢুকতে যাচ্ছি, আমার সামনে দিয়ে পিয়ালীদের গাড়ীটা হুঁশ করে চলে গেলো। সাথে সাথে আমার মেজো মেয়ে বলে উঠলো, " এই কি এই কি, আন্টিকে না নিয়ে গাড়ী চলে গেলো।" আমি গাড়ীতে না উঠে গাড়ীর ওপাশে চলে গেলাম, গিয়ে দেখি, পিয়ালী হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে আছে, আর আমার মেয়ে হাসতে হাসতে কুটিপাটি হচ্ছে। আমি নিজেও অবাক হয়ে গেছি, আমি ধরে নিয়েছি জয়দীপ ঠাট্টা করেছে পিয়ালীর সাথে। কিনতু পিয়ালী বলছে যে জয়দীপ ঠাট্টা করেনি, ও খেয়ালই করেনি যে পিয়ালী গাড়ীতে উঠেনি, সে মামনির সাথে গল্প করায় ব্যস্ত ছিল। এবার আমিও হাসতে শুরু করলাম, পিয়ালীও হাসছে, আমার বর গাড়ীতে বসে থেকে বুঝতে পারছিলোনা প্রথমে, পরে সেও অবাক হয়ে গেছে। যাই হোক পিয়ালী হাতের ফোনটা থেকে জয়দীপকে ফোন করলো, রিং বেজে ভয়েস মেসেজে চলে গেছে। আমাদেরকে পাশে পেয়ে পিয়ালী একটু নিশ্চিন্ত বোধ করছিলো আর বলছিলো, জয়দীপকে দিয়ে সব সম্ভব। ও এমনই আপনভোলা।

ওদিকে জয়দীপের গাড়ীতে কি হচ্ছিলো! গাড়ী ছুটিয়ে দিয়ে জয়দীপ নাকি একমনে পিয়ালীকে উদ্দেশ্য করে কথা বলে যাচ্ছিল।
 মন্দিরা মাসী আর দুইদিন পরেই দেশে ফিরে যাচ্ছেন, সেই ব্যাপারে কথা হচ্ছিল। পেছন থেকে ঋষি নাকি বলে চলেছে, " এই তুই কি রে, মা তো নেই, মা গাড়ীতে নেই। মাকেতো গাড়ীতে তুলিসনি (তিন বছরের ঋষি বাংলা শিখছে, তাই সবাইকে তুই করে বলতে শোনে বলে ও নিজেও সবাইকে এমন মিষ্টি করে তুই ডাকে)। বারবার ঋষি এমন কথা বলছে দেখে জয়দীপ গাড়ীর মিরর এ তাকিয়ে দেখে সত্যিই পিয়ালী পেছনে নেই। কিনতু আমেরিকার রাস্তায় গাড়ী ঘুরিয়ে আনা আরেক হ্যাপা। পরের এক্সিট না আসা পর্যন্ত গাড়ী ঘোরানো যাবেনা। মন্দিরা মাসী ভয় পেয়ে গেছে, ভেবেছেন গাড়ীর দরজা বোধ হয় লকড হয়নি, তাই দরজা খুলে গিয়ে পিয়ালী বাইরে পড়ে গেছে। কারন পিয়ালী গাড়িতে উঠেনি, এটাতো হওয়ার কথা না। এরপরেই জয়দীপের ফোন বেজে উঠতেই জয়দীপ মা'কে নিশ্চিন্ত করলো বলে যে পিয়ালী পড়ে যায়নি, ফোন করছে। কিনতু ঘটনার আকস্মিকতায় ওরাও এমন থতমত খেয়ে গেছিল যে ফোনটা রিসিভ করার মত বুদ্ধি ঐ মুহূর্তে কাজ করেনি।

এদিকে আমরা অন্তঃত দশ মিনিট টান টান উত্তেজনার ভেতর থাকার পর জয়দীপের গাড়ীর হেডলাইট দেখতে পেয়ে পরম নিশ্চিন্ত হলাম।
 গাড়ী কাছে আসতেই পিয়ালী হাসতে হাসতেই শুধু বললো, " এটা কি হলো" আর জয়দীপকে দেখলাম মাথা নীচু করে হাসছে। আর মন্দিরা মাসী জানালার কাঁচ খুলে আমাদেরকে গাড়ীর ভেতরের গল্পটুকু শোনালো, মন্দিরা মাসী যখন গাড়ীর ভেতরের গল্প বলছিলো, ছোট্ট দেবর্ষি তখন মিটিমিটি করে বিজয়ীর হাসি দিচ্ছিলো, কারন সে ছিলো বলেইনা তার পিয়ালী মা'কে শেষ পর্যন্ত ফিরে পাওয়া গেলো!

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আবু জাফর

আমার ছবি আঁকার সাতকাহন কাশ ফুলের সারি , বাঁকা নদীর পারে একে বেঁকে সরু মেঠ পথ, দু'একটা খেজুর গাছ দাঁড়িয়ে , একটু হাঁটলেই রাস্তার দুপাশে বাবলা গাছের সারি, ছোট ছোটো হলুদ ফুলে ছেয়ে আছে।   একটু হালকা মিষ্টি গন্ধে মৌমাছিদের গুন গুনে শব্দ। চড়ুই পাখীরা খেলায় মেতে উড়ে আসে আর যায়।   টুনটুনিদের গান , সবুজ ধানে ভরা চারি দিক বাতাসের আলতো ছোঁয়াতে ঢেউ খেলা সুখ উল্লাসে মিশে গেছে ঐ আকাশ দূর দিগন্তে। প্রকৃতির অফুরন্ত সুন্দরে বাংলাদেশের একটা গ্রাম ঝিলনা।   চারু শিল্পী আবু জাফর ঐ গ্রামেই হাটি হাটি পা বাড়িয়ে প্রকৃতির অপরূপে মোহিত চোখে দেখা সুন্দরকে কলমের রেখাতে রূপদানে শুরু করে শিল্প যাত্রা মাত্র ৬ বছর বয়েসে। রাফ খাতার উপরে খেজুর গাছ , পালতোলা নৌকা , কাশ ফুল , উরন্ত বক, পাখী আর মেঘের ভেলা মাঝ খানে সুন্ধ্রর কোরে " আবু জাফর মুহাম্মাদ সালেহ " । আনআনন্দে ভরা জাফর মুখে মুছকি হাসি।

এ টি এম হায়দার খান

একজন সীমাবদ্ধ ভাগ্যের মানুষ একশত উনিশ বছর আগের কথা। ১৮৯৬ সালের বসন্তের প্রায় শেষদিক। ভারতবর্ষের চারিদিকে দুর্ভিক্ষ জেঁকে বসেছে। চারিদিকে হাহাকার রোগশোকের ছড়াছড়ি। সদ্য মেডিসিন নিয়ে পাশ করে হেমন্ত ব্যানার্জি বিলেত থেকে এই রকম সময়ে নিজ দেশে প্রত্যাবর্তন করলেন। সমসাময়িক যে কজন বিলেত ফেরত ডাক্তার ভারতবর্ষে ছিলেন, তিনি তাদের মধ্যে অন্যতম একজন মেধাবী হেমন্ত ব্যানার্জি।

আবু জাফর

হোম পেজে যেতে এখানে ক্লিক করুন। বিস্তারিত পড়ার জন্য লেখকের নামের ওপর ক্লিক করুন কুয়াশায় সকাল সকাল বেলা উঠে, জানালার ওই দিকে তাকিয়ে দেখি কুয়াশা ভরা সকাল খেলছে লুকোচুরি তার নিজের গতিধারায়। ভাবছি যাব লন্ডনে। অনেকদিন হলো দেখা হয়না চিত্র প্রদর্শনী।  বেশ শীত শীত ভাব, পাহাড়ের উপর থেকে নেমে দেখি প্রচন্ড কুয়াশায় ভরে গেছে পাদদেশ। দেখা যায় না তেমন কিছু। কুয়াশার চাদরে ঢেকে গেছে প্রকৃতি। ঘাসের উপরে শুকনো পাতাগুলো আমার পায়ের স্পর্শে গাইছে শীতের গান, মূর্মুর শব্দে। সকালের পাখিরাও গান ধরেছে গাছের চূড়ায়, ওই মগডালে। মায়ায় জড়ানো সকাল সত্যিই এক কল্পলোকের নতুন গল্প। রাস্তার এপারে দাঁড়িয়ে একটু নিঃশ্বাস নিলাম । যেতে হবে ওই পারে। দেখছি ডানে-বামে কোন গাড়ি আসছে কিনা। ধীরে ধীরে হেঁটে যাবো স্টেশনে। লাগবে প্রায় 30 মিনিট। আঁকাবাঁকা গ্রাম পথে হেটে যেতে কি যে মজা, এই গ্রামে না এলে তা একেবারেই উপলব্ধি করা যায় না। দুই পাহাড়ের পাদদেশের ছোট্ট একটা নদী বয়ে চলেছে ধীরে ধীরে।মাঝে মাঝে দু'একটা