সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

আবু জাফর

হোম পেজে যেতে এখানে ক্লিক করুন। বিস্তারিত পড়ার জন্য লেখকের নামের ওপর ক্লিক করুন

কুয়াশায় সকাল

সকাল বেলা উঠে, জানালার ওই দিকে তাকিয়ে দেখি কুয়াশা ভরা সকাল খেলছে লুকোচুরি তার নিজের গতিধারায়। ভাবছি যাব লন্ডনে। অনেকদিন হলো দেখা হয়না চিত্র প্রদর্শনী। 

বেশ শীত শীত ভাব, পাহাড়ের উপর থেকে নেমে দেখি প্রচন্ড কুয়াশায় ভরে গেছে পাদদেশ। দেখা যায় না তেমন কিছু। কুয়াশার চাদরে ঢেকে গেছে প্রকৃতি। ঘাসের উপরে শুকনো পাতাগুলো আমার পায়ের স্পর্শে গাইছে শীতের গান, মূর্মুর শব্দে। সকালের পাখিরাও গান ধরেছে গাছের চূড়ায়, ওই মগডালে। মায়ায় জড়ানো সকাল সত্যিই এক কল্পলোকের নতুন গল্প। রাস্তার এপারে দাঁড়িয়ে একটু নিঃশ্বাস নিলাম । যেতে হবে ওই পারে। দেখছি ডানে-বামে কোন গাড়ি আসছে কিনা। ধীরে ধীরে হেঁটে যাবো স্টেশনে। লাগবে প্রায় 30 মিনিট। আঁকাবাঁকা গ্রাম পথে হেটে যেতে কি যে মজা, এই গ্রামে না এলে তা একেবারেই উপলব্ধি করা যায় না। দুই পাহাড়ের পাদদেশের ছোট্ট একটা নদী বয়ে চলেছে ধীরে ধীরে।মাঝে মাঝে দু'একটা 


নৌকা বাঁধা ঘাটে। পাহাড়-পাদদেশে আঁকাবাঁকা উঁচু-নিচু নদী। মাঝে মাঝে পাহাড়ের উপরে এবং নিচে নামার জন্য রয়েছে সুন্দর সুদক্ষ যাত্রা পথ ও বেষ্টনী ঘাট, যা নদী লক হিসাবে পরিচিত। ভাবছি আজকে নদীর পাদদেশ দিয়ে হেঁটে হেঁটে স্টেশনে যাব। মন ভুলানো প্রকৃতির অপরূপ সুন্দর দৃশ্য, পাহাড় নদী প্রকৃতি গাছপালা। নদীতে রয়েছে জানা না জানা অনেক পাখির বাস। এখানে কেউ মারে না কোন পাখি। বেশ কুয়াশা, আধো আধো দিনের আলোয় আমি যেন সত্যি কোন এক অ্যাবস্ট্রাক্ট পেন্টিং এর মধ্য দিয়ে হেঁটে যাচ্ছি। এ পেইন্টিং এর ক্যানভাস এত বড় যে যার মধ্যে আমি হেটে চলেছে অনেক অনেক দূরে। এই পেইন্টিং এর রং আজকের কুয়াশা, চারিদিকে প্রকৃতি, পায়ের নিচে পাতা পড়ার শব্দ,নদী, পাহাড়, ট্রেন চলা শব্দ, আর দূরে কোথাও হাম্বা হাম্বা গরুর ডাক। সত্যি সুন্দর একটা গ্রাম Kings Langley. 


ট্রেন টিকেট কেটে নিয়ে একটু হেঁটে ওপারে বিশ্রাম কক্ষ কফি শপI কফি গন্ধে আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলাম না। এক কাপ কফি ডাবল এস্প্রেসো হাতে নিয়ে বেশ একটু গরম অনুভব করলামI ট্রেন এল ঠিক সময় লাইন ধরে একের পর এক উঠে পড়লাম ট্রেনে 30 মিনিট পরে থেমে গেল গন্তব্যে লন্ডন I এবারে আন্ডারগ্রাউন্ড 30 মিনিট পরে, ট্যাট গ্যালারি লন্ডন। টার্নার পুরস্কার শিল্প প্রদর্শনী। চার শিল্পী সংক্ষিপ্ত তালিকাভুক্ত করা হয়। তাদের মধ্যে একজন বাংলাদেশী ব্রিটিশ। সত্যিই অনেক গর্বিত এ নিয়ে দুজন বাংলাদেশী শিল্পী টার্নার পুরস্কার শিল্প প্রদর্শনীতে দীর্ঘ 34 বছরের ইতিহাসে এই বছর, টার্নার পুরস্কারের সব শিল্পীরা ভিডিও শিল্প তৈরি করেছেন। 


দীর্ঘ চার ঘন্টা যাবত ভিডিও ইনস্টলেশন দেখে আমার মনে হয় না কোন মানুষ ভালো শিল্প দেখার জন্য এমন করে চার ঘণ্টা অতিবাহিত করবে। তারপরেও অনেক কষ্ট করে তিন ঘন্টা যাবত ছবিগুলো দেখলাম! আবার যেতে হবে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে। জানতে চাইছে এমন অনেক কিছুই ওই শিল্পের মধ্যে যা আমরা সাধারণ মানুষ জানতে পারিনি। অন্যভাবে শিল্পীর শৈল্পিক নির্মাণ শক্তি সাধারণ মানুষকে করবে উদ্বুদ্ধ তাদের প্রতিদিনের চিন্তা ধারায়। 

কিন্তু এবারের এই প্রদর্শনীটি আমার কাছে সত্যি মনে হয়েছে শিল্পচেতনার যেন কোথায় অবমাননা। একটা বড্ড বেমানান আধুনিক চিন্তা শক্তির বিকাশে। শিল্প প্রদর্শনী করতে অনেক গুনের প্রয়োজন, ভাবতে হয় চারিদিক..... 
পরবর্তী অংশ পরের সংখ্যায় ......

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

রিতা রায় মিঠু

সেদিন সন্ধ্যায় যা ঘটেছিল ২৮শে ফেব্রুয়ারী ছিল হিমাংশু ও মিত্রার দশম বিবাহবার্ষিকী।   দিনটি ছিল মঙ্গলবার , তাই কারোরই ছুটি ছিলোনা।   প্রবাসে প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী সামাজিক অনুষ্ঠানগুলো সপ্তাহের শনিবার বা রবিবার উদযাপন করা হয়ে থাকে , নাহলে শুক্রবার সন্ধ্যাটিও মন্দ হয়না।   আমরা সবাই মিলে মিশে ঠিক করেছিলাম মিত্রা - হিমাংশুর দশম বিবাহ বার্ষিকী উদযাপন করবো ৯ই মার্চ , শুক্রবার সন্ধ্যাতে।

রীতা রায় মিঠু

সারপ্রাইজ উইশ! আমরা আমেরিকায় এসেছি ২০০১ সালে , প্রথম বসত করেছি ওয়েস্ট ভার্জিনিয়া নামক পাহাড় ঘেরা রাজ্যে। এত সুন্দর   রাজ্য ওয়েস্ট ভার্জিনিয়া , যে সৌন্দর্য্য ভাষায় বর্ণনা করা যায় না।   বর্তমান মিসিসিপি রাজ্যে চলে আসার আগে ওয়েস্ট ভার্জিনিয়াতে তিন বছর ছিলাম। যদিও ওয়েস্ট ভার্জিনিয়া নামের সাথে অনেকেই ' ভার্জিনিয়া ' কে গুলিয়ে ফেলে। দুটি আলাদা আলাদা রাজ্য , কিন্তু পাশাপাশি।