সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

এ টি এম হায়দার খান

একজন সীমাবদ্ধ ভাগ্যের মানুষ

একশত উনিশ বছর আগের কথা। ১৮৯৬ সালের বসন্তের প্রায় শেষদিক। ভারতবর্ষের চারিদিকে দুর্ভিক্ষ জেঁকে বসেছে। চারিদিকে হাহাকার রোগশোকের ছড়াছড়ি। সদ্য মেডিসিন নিয়ে পাশ করে হেমন্ত ব্যানার্জি বিলেত থেকে এই রকম সময়ে নিজ দেশে প্রত্যাবর্তন করলেন। সমসাময়িক যে কজন বিলেত ফেরত ডাক্তার ভারতবর্ষে ছিলেন, তিনি তাদের মধ্যে অন্যতম একজন মেধাবী হেমন্ত ব্যানার্জি।
সবার ধারণা ছিলো দেশে ফিরে হেমন্ত বাবু নিজ শহর কোলকাতাতেই রোগী দেখবেন, ভারত এর পশ্চিম দিক কার অর্থনৈতিক প্রাণকেন্দ্র এই অংশটি এখন পশ্চিমবঙ্গ নামে পরিচিত। চিরাচরিত নিয়মে হেমন্তবাবুর উজ্জ্বল ডাক্তারি প্রতিভা দেখিয়ে যেখানে কাড়ি কাড়ি টাকা বানানোর সমুহ সম্ভাবনা দেখতে আরম্ভ করেছিলেন তার আত্মীয় স্থানীয় লোকেরা। কিন্তু সবার ভাবনা কে আশ্চর্য ভাবে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে সম্পূর্ণ নিজ খরচে ও বিনা বেতনের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি দাতব্য চিকিৎসালয় খুলেন । তার স্বাধীনচেতা মন কক্ষনও কাউকে তার কার্যকলাপ সম্পর্কে প্রশ্ন তোলার সু্যোগ পর্যন্ত দেন নি কোনদিন। তার দেশন্তপ্রায় হৃদয় সব সময় নিজের দেশের মানুষের কল্যানে সর্বদা ব্যতিব্যস্ত থাকত। আর সাধারন মানুষ ও তার এই উদার হৃদয়ের কৃতজ্ঞতা খুব শ্রদ্ধাভরেই স্মরণ করত।
উল্লেক্ষ, হেমন্ত একা বসবাস করতেন, কোন রক্তের টান তার ছিলনা। ১৮৮৯ এ তিনি বিলেত পাড়ি জমানোর দু বছরের মাথায় তার বাবার মৃত্যু হয়। তাই নিজের একাকিত্ব কে তিনি গন্ডির মধ্যে গুমরে ওঠার সুযোগ না দিয়ে সাধারন মানুষের মাঝে নিজেকে ভাগ করে নিতেন।যদিও দিনশেষে আবার তাকে একা থাকতেই হোত। বাবাই ছিল তার একমাত্র সম্বল। ১৮৮০ সালের ওলা ওঠার ভয়ংকর কবল থেকে তার বাবা নিজেকে তো বাচিয়ে নিয়েছিলেন কিন্তু পরিবারের আর কাউকে সেই মৃত্যুশীতল স্পর্শ ক্ষমা করেনি।
যাই হোক অবিবাহিত হেমন্তবাবু কিন্তু কন্যা দায়গ্রস্থ পিতাদের কাছে বেশ চাহিদাসম্পন্ন হয়ে উঠলেন। এনাদের মধ্যে স্থানীয় কালেক্টর বাবু অন্যতম। তার সাতপুত্র ও একমাত্র কন্যা প্রিয়বাসিনী কে নিয়ে সংসার। ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের দুত হিসাবে তার প্রতিপত্তি নেহাত কম ছিলনা।
বলায়বাহুল্য, এমন একজন ক্ষমতাধর মানুষের উপযুক্ত জামাই হিসাবে হেমন্ত বাবুর তুলনা তখন ছিলনা। সুতরাং হেমন্ত বাবু একদিন নিমন্ত্রন ও পেয়ে গেলেন। ১৭ বছর বয়ষ্কা প্রিয়বাসিনীকে আপন করে পাওয়ার জন্য সত্যি ভাগ্যের ও কিছুটা সহায়তার দরকার ছিল। কেননা তার রুপ আর গুনের কাছে তার বাবার সমস্ত ক্ষমতা প্রতিপত্তি সব ফিকে হয়ে যেত।ধুসর আয়ত চোখ আর সপ্তাদশি যৌবন এক কথায় অতুলনীয়া করে তুলেছিল তাকে। গোলাকার মুখচ্ছবি, সুগঠিত নাক, টানা ভ্রুযুগল, গোলাপি ঠোট আর আকর্ষনীয় কটিদেশের সাথে যুক্ত হয়েছিল সাবলিল হাসি, সমুদ্রের মত গভির দৃষ্টি। কিন্তু তার পরেও তার ক্ষুরধার বুদ্ধির চ্ছটা বেশ ভালোভাবে টের পাওয়া যেত। তার হাসিতে ছিল নিখুত শান্ত সমুদ্রের মত মৌনতা, হাসাতে গেলে সাধারণ এর মতো গাল ফুলে উঠে না অথচ নিচের ঠোট অধিকতর নীচে সরে আসে, কিন্তু তার সেই হাসির আড়ালে বুদ্ধিদীপ্ত স্বত্তাকে সহজেই খুজে পাওয়া যেত, চোখ দুটি শীতল, উষাকালে সূর্য উঠার আগে, চন্দ্র অস্তের পর আকাশের যে কমল নীল বর্ণ প্রকাশ্ পায় প্রিয়বাসিনীর চোখের বর্ণ সেই রূপ, কারু কার্য খচিত দেহ, এবং সেই দেহে স্তিরিয়তা ছিলো নাকানে হীরের অলংকার আর গলায় রাজকীয় হিরক মালা, নতুন পাশ্চাত্য অনুষঙ্গ ব্যবহারে তাই কুন্ঠা বোধ তো ছিলই না বরং স্বর্ণকেশী সেজে থাকতে সে ভালইবাসতো। তার মুখের কমনীয়তা রেশমি চুলের সাথে মিলে মিশে তাকে অপ্সরা করে দিয়েছিল।
গ্রীক দেবি ভেনাসের মত দেহসৌষ্ঠব আর অত্যাধুনিক সাজপোষাকের সাথে তার উচ্চমারগীয় রুচিবোধ এর সংমিশ্রন যেকোন পুরুষের হৃদয় বিদীর্ণ করে দিতে যথেষ্ট এর থেকে কিছুটা বেশীই ছিল। আর সেই তীক্ষ্ণ দৃষ্টির তীর হেমন্ত বাবুর ও হৃদয়ে আলোড়ন তুলল। তিনি প্রিয়বাসিনীর প্রেমে না পড়ে পারলেন না।
কালেক্টর বাবু লোক চিনতেন। হেমন্ত বাবুর মত পাত্র লাখে একটা মেলে এটা তিনি বেশ ভালোই বুঝেছিলেন। তাই হেমন্ত বাবুর প্রস্তাবে দ্বিমত তো করলেনই না বরং তাকে একটি বেশ মোটা রকমের যৌতুকের সাথে কলকাতাতেই একটি যুগপযোগি হাসপাতালের বন্দবস্ত করে দেয়ার প্রস্তাব রাখলেন। কিন্তু আধুনিক মনমানষিকতায় বড় হওয়া হেমন্ত বাবু সে প্রস্তাব বিনম্র ভাবে ফিরিয়ে দিলেন। কালেক্টরবাবু এ নিয়ে আর কথা বাড়ালেন না। পরবর্তীতে একটা সুরাহা করবেন নিশ্চিত করে কথা পাকাপাকি করে ফেললেন। প্রিয়বাসিনী আর হেমন্ত বাবুর গাঁটছড়া তিনি বেশ ঘটা করেই বেধে দিলেন। অনেক মিষ্টি মধুর স্বপ্নে বিভোর হয়ে শুরু হল নবদম্পতির স্বপ্ন বোনার পথচলা
কিন্তু ঐ যে, মানুষের ভাগ্য, নিয়তি, স্থান, কাল পাত্র সব ওপরতলায় বসে যিনি নিয়ন্ত্রন করেন, তিনি হয়তন্যরকম কিছুই ঠিক করে রেখেছিলেন। সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্ম নেয়া প্রিয়বাসিনী নিজেকে হেমন্তবাবুর সাধারন জীবনযাপনে মানিয়ে নিতে পারলেন না। তার ক্রমবর্ধমান বিলাসী চাহিদা অপুর্ণই থেকে যেতে লাগল। উপরন্ত হেমন্তবাবু যখন শ্বশুরের অর্থপ্রস্তাব বার বার ফিরিয়ে দিতে লাগলেন তখন আ গোদের উপরে বিষফোঁড়া হয়ে দেখা দিল। হেমন্তবাবুর আত্মবিশ্বাস অটুট থাকল বারবার। নিজের চেষ্টায় ভালভাবে চলাটা আর লক্ষ্যে পরিনত হয়ে গেছে ততদিনে। এভাবে বছরদুয়েক চলার পর প্রিয়বাসিনী গর্ভধারণ করল। এতদিনের ছাইচাপা আগুনে এই খবরটা ঘি হয়ে পড়ে দাউ দাউ করে জ্বলে উঠল। দিনে দিনে প্রিয়বাসিনীর বিতৃষ্ণার ভাব টা আরও বেড়ে গেল। তার কোল আলো করে আসা পুত্র সন্তান ও তার মনোভাব থিক করতে পারল না। ফলে ৬ দিনের শিশুবাচ্চা কে ফেলে রেখেই প্রিয়বাসিনী হেমন্তের ঘর ছাড়ল।
হেমন্ত বাবু জানতেন যে তাকে ছেড়ে যাওয়ার জন্য প্রিয়বাসিনীর যথেষ্ট কারন রয়েছে। তাই তিনি প্রতিবাদ করেন নি। তার মনের কোনে তবুও কোথাও যেন কিছু ভালবাসা অবশিষ্ট থেকে গিয়েছিল যেটা তাকে প্রিয়বাসিণীর ফিরে আসার ব্যাপারে স্বপ্ন দেখাত। তিনি মানিয়ে নিলেন নিজেকে। আর প্রিয়বাসিনী ও তার কাঙ্ক্ষিত পয়সাওয়ালা ছেলে পেয়ে আবার নতুন করে সংসার পাতল। যদিও তৎকালীন সমাজে পুনর্বিবাহ নিষিদ্ধ ছিল, তবে তা প্রিয়বাসিনীর মত ধনী বাবার মেয়েদের জন্য নয়। সে তার অতীত ভুলে নতুন সংসারে মন দিল।
হেমন্ত বাবু কিন্তু আর দ্বিতীয় বিবাহ করলেন না। প্রিয়বাসিনী যাওয়ার আগে তাকে দিয়ে গেছে পৃথিবীর সবচেয়ে দামি রত্ন। তার ছেলে শিশির। হেমন্ত বুঝেছিলেন, অভাব তার সংসার ভেঙ্গেছে তাই তিনি শিশির কে অভাব বোধ করতে দিলেন না কখনোই। শিশির বাবার অমানুষিক পরিশ্রমের ফলে কলকাতার ভাল প্রতিষ্ঠানে ভাল হোস্টেলে থেকে আর পড়াশোনা শেষ করল।
ইতোমধ্যে কেটে গেছে ১৭ টি বসন্ত। শিশির বড় হয়েছে। প্রিয়বাসিনীর নতুন সংসারে আরো একটি পুত্র ও ২ টি কন্যা সন্তান হয়েছে। সে শিশিরের খোজ নেয়নি কোনদিন। আর হেমন্তবাবু ও শিশিরকে নিষেধ করেছিলেন তার মা সম্পর্কে কিছু জিজ্ঞেস করতে।
কোন এক শরতে দুর্গা পুজার ছুটিতে শিশির তার বাবাকে দেখতে এল। প্রিয়বাসিনী ও তার ছেলেমেয়েদের সাথে নিয়ে বাবার ওখানে এল পুজা উপলখ্যে। গ্রামে ধনী পরিবার বলতে কালেক্টরবাবুর পরিবার ই সব থেকে উচুতে। তাই প্রধান দুর্গোৎসব টা সেখানেই হয়। আগে গ্রামের বাইরে থাকায় শিশির কখোনোই সেখানে যায়নি। তাই বন্ধুরা যখন জোর করল সেও আর না করল না। তার এক দুঃসম্পর্কের দাদাঠাকুর একদিন কথায় কথায় বলেছিলেন তার মামাবাড়ী ওদিকেই কোথাও। তাই শিশিরের মনে ক্ষিন আশা জাগল দশম জন্মতিথিতে বাবার দেওয়া মায়ের একমাত্র ছবির আদলে মা কে যদি খুজে পাওয়া যায়। ঠাকুর তাকে নিরাশ করলেন না। কালেক্টরবাবুর মন্দিরে আরতি লগ্নে এক কোনে সে তার মা কে দেখতে পেল। ছবির মত নেই কিন্তু ছেলের চোখে মায়ের মুখ অচেনা থাকল না। মনের মধ্যে তীব্র ভাবে জেগে ওঠা মা ডাকার নেশাটা ও তার কাছে মিথ্যে মনে হলনা। দু চোখে এক সমুদ্র পিপাসা নিয়ে সে দেখতে লাগল তার মায়ের হাসিমুখ।
প্রিয়বাসিনি চকিতে দেখল একটা অল্পবয়সী ছেলে তার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে। সে ভয় পেল। ইদানিং বাবার মুখে শুনেছে গ্রামে চোরের উৎপাত বেড়েছে খুব। এরা নাকি সাথে আবার ছুরি ও রাখে। সে নিজেকেই ধিক্কার দিতে লাগল সবথেকে দামি গয়না গুলো পরেছে বলে। ও ব্যাটা নিরঘাত চোর না হলে চোরের সাগ্রেত হবে। তার গয়নার লোভে অমন ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছে। সন্ধ্যা ও হয়ে এসেছে প্রায়। আলো থাকতে থাকতেই সে ঘরমুখো হল।
পুজো মন্ডপ পাহারার পাইক গুলো আশেপাশেই ছিল। ওরা দেখল একটি ছেলে মেম সাহেবের পিছু নিয়েছে।
শিশির নিজের মা কে প্রথম বার দেকছে। তার মনে আজ প্রশান্ত মহাসাগরের ঝড় বয়ে যাচ্ছে। মা কে আরো কাছ থেকে দেখার লোভ সাম্লাতে পারলোনা সে। তাই মা এর পিছুপিছু চলল সে। ব্যাগ থেকে ছবিটা বের করে দেখাতে হবে মা কে। বলতে হবে সে তার ছেলে। অন্তত একবার ডাকবে মা বলে।
বাড়ির সদর দরজা পর্যন্ত যেতে পারল সে। তারপর পেয়াদাদের ভয়ে এগোতে সাহস পেল না। কিন্তু মনের মধ্যে অশান্ত ভাব টা ক্রমশ তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে উঠল তার। তাই সবার অলখ্যে প্রাচির টপকিয়ে বাড়ির ভেতর গেল শিশির।
ছেলেটাকে দেখার পর থেকেই কেমন অস্থির লাগছিল প্রিয়বাসিনীর। ঘুমাতে না পেরে ব্যাল্কনিতেই বসে ছিল। আর সেখান থেকেই দেখল মাঝ রাতে সন্ধ্যায় দেখা ছেলেটাকে দেয়াল টপকাতে। এবার সবকিছু পরিস্কার হয়ে গেছে তার কাছে। এতক্ষন শুধু শুধুই মায়া লাগছিল ওর জন্য। বেটা চোর ছাড়া আর কিছুই নয়। নইলে এত রাতে বাড়িতে দেয়াল টপকে আসে। দ্বোতলা থেকেই চিৎকার দিল সে জোর গলায়। পুজার সময় তাই বাড়িতে লোকের অভাব নেই। তার একডাকেই চারিদিকের ঘর থেকে লোক এসে ঘিরে ধরল শিশির কে আর বেধড়ক মারতে শুরু করল। বেদম গনপিটুনির চোটে শিশির একটা কথা ও বলতে পারল না। প্রিয়বাসিনী উপর থেকেই সব দেখছিলেন। এবার নিচে নেমে এলেন। ততক্ষনে কোন একজনের লাথিতে শিশিরের ঘাড় মটকে গেছে। কথা বেরোচ্ছে না প্রায় আর। প্রিয়বাসিনী গেলেন শিশিরের কাছে।
ও দিকে হেমন্ত বাবু শিশিরের বন্ধুদের থেকে খবর পেয়ে প্রায় দৌড়েই আসছিলেন শিশির কে এই এলাকা থেকে নিয়ে যেতে। পরে খোজা খূজি করতে করতে স্বশুরের বাড়ির সামনে এসে হট্টগোল শুনে উকি দেন। আর দেখেন রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে তার ছেলে আর তার প্রাক্তন স্ত্রী এগিয়ে যাচ্ছেন মৃতপ্রায় ছেলের দিকে।জিগ্গেস করলেন শিশির কে এতো কম বয়সে কেন চুরির অভ্বেস হলো, শিশির এর পক্ষে কথা বলা কঠিন ছিলো, এক মুখ রক্ত বোমি করে সে বললো " আপনি দেখতে আমার মায়ের মতো" প্রিয়বাসিনী শিশির এর জবাব এর ভির্তি জানতে চাইলেন, আরো একবার রক্ত বোমি করে শিশির তার মায়ের ছবি টি বের করে দেখাল আর তৎক্ষণাৎ প্রিয়বাসিনী যা বোঝার বুঝে নিয়েছেন। পাথরের মতো স্তব্দ হয়ে ভাবতে লাগলেন শিশির এর কাছে মা হয়ে ক্ষমা চাইবেন নাকি মায়ের মমতা দিয়ে শিশিরকে বুকে তুলে নিবেন. হেমন্ত দূর থেকে চিত্কার করে ছেলেকে ডাকলেন. কিন্তু বাবার ডাক শিশির এর কানে পৌছানোর আগে এবং প্রিয়বাসিনী কোনো স্তির চিন্তা করার আগেই শিশির ইহকাল ছেড়ে পরকালে গমন করলো, হেমন্ত বাবু ছেলের নিথর দেহ টি কোলে তুলে নিয়ে আর একটি কথাও না বলে অনেক শান্ত স্বাবাভিক ভাবে নিজের বাড়ির উদ্দেশে যাত্রা করলেন।

পরিশিষ্টঃ
হেমন্ত বাবু এর পর আর দু বছর বেচে ছিলেন। নিজের ছেলের বেয়োগে প্রিয়বাসিনী কতটুকু দুক্ষিত  হয়ে ছিলেন জানি না, হেমান্তের মিত্তুর পর তাকে টেলিগ্রাম করা হযাছিল কিন্তু তার কোন জবাব আসে নি!

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আবু জাফর

আমার ছবি আঁকার সাতকাহন কাশ ফুলের সারি , বাঁকা নদীর পারে একে বেঁকে সরু মেঠ পথ, দু'একটা খেজুর গাছ দাঁড়িয়ে , একটু হাঁটলেই রাস্তার দুপাশে বাবলা গাছের সারি, ছোট ছোটো হলুদ ফুলে ছেয়ে আছে।   একটু হালকা মিষ্টি গন্ধে মৌমাছিদের গুন গুনে শব্দ। চড়ুই পাখীরা খেলায় মেতে উড়ে আসে আর যায়।   টুনটুনিদের গান , সবুজ ধানে ভরা চারি দিক বাতাসের আলতো ছোঁয়াতে ঢেউ খেলা সুখ উল্লাসে মিশে গেছে ঐ আকাশ দূর দিগন্তে। প্রকৃতির অফুরন্ত সুন্দরে বাংলাদেশের একটা গ্রাম ঝিলনা।   চারু শিল্পী আবু জাফর ঐ গ্রামেই হাটি হাটি পা বাড়িয়ে প্রকৃতির অপরূপে মোহিত চোখে দেখা সুন্দরকে কলমের রেখাতে রূপদানে শুরু করে শিল্প যাত্রা মাত্র ৬ বছর বয়েসে। রাফ খাতার উপরে খেজুর গাছ , পালতোলা নৌকা , কাশ ফুল , উরন্ত বক, পাখী আর মেঘের ভেলা মাঝ খানে সুন্ধ্রর কোরে " আবু জাফর মুহাম্মাদ সালেহ " । আনআনন্দে ভরা জাফর মুখে মুছকি হাসি।

আবু জাফর

হোম পেজে যেতে এখানে ক্লিক করুন। বিস্তারিত পড়ার জন্য লেখকের নামের ওপর ক্লিক করুন কুয়াশায় সকাল সকাল বেলা উঠে, জানালার ওই দিকে তাকিয়ে দেখি কুয়াশা ভরা সকাল খেলছে লুকোচুরি তার নিজের গতিধারায়। ভাবছি যাব লন্ডনে। অনেকদিন হলো দেখা হয়না চিত্র প্রদর্শনী।  বেশ শীত শীত ভাব, পাহাড়ের উপর থেকে নেমে দেখি প্রচন্ড কুয়াশায় ভরে গেছে পাদদেশ। দেখা যায় না তেমন কিছু। কুয়াশার চাদরে ঢেকে গেছে প্রকৃতি। ঘাসের উপরে শুকনো পাতাগুলো আমার পায়ের স্পর্শে গাইছে শীতের গান, মূর্মুর শব্দে। সকালের পাখিরাও গান ধরেছে গাছের চূড়ায়, ওই মগডালে। মায়ায় জড়ানো সকাল সত্যিই এক কল্পলোকের নতুন গল্প। রাস্তার এপারে দাঁড়িয়ে একটু নিঃশ্বাস নিলাম । যেতে হবে ওই পারে। দেখছি ডানে-বামে কোন গাড়ি আসছে কিনা। ধীরে ধীরে হেঁটে যাবো স্টেশনে। লাগবে প্রায় 30 মিনিট। আঁকাবাঁকা গ্রাম পথে হেটে যেতে কি যে মজা, এই গ্রামে না এলে তা একেবারেই উপলব্ধি করা যায় না। দুই পাহাড়ের পাদদেশের ছোট্ট একটা নদী বয়ে চলেছে ধীরে ধীরে।মাঝে মাঝে দু'একটা